Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

ঢলে পড়া রোগ নিয়ন্ত্রণে বেগুনের গ্রাফটিং প্রযুক্তি

ঐতিহ্য এবং বংশীয়ক্রমে বেগুনের উৎপত্তিস্থল ভারতীয় উপমহাদেশ। নামে গুণহীনতা পরিচয় থাকলেও পুষ্টি ধারণের দিক দিয়ে অন্যান্য সবজির তুলনায় চর্বি বা স্নেহজাতীয় পদার্থে প্রথম, ভিটামিন বি২ (রিবোফ্লাবিন)  ধারণে দ্বিতীয় এবং আমিষে তৃতীয় অবস্থান ধারণ করে। তাই পুষ্টিগত উপাদানের বিবেচনায় বেগুনের গুরুত্ব মোটেই কম নয়। বেগুন অত্যন্ত রুচিশীল, সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর সবজি। বাংলাদেশে প্রায় ৮৯ ধরনের শাকসবজি চাষ করা হয়। প্রধানতম ০৯টি সবজির মধ্যে  বেগুন অন্যতম। বেগুন উৎপাদনে মাঠ পর্যায়ে ঢলে পড়া রোগটি ক্যান্সারের মতো প্রভাব বিস্তার করে। ফলে কৃষকরা প্রতি বছর মারাত্মক অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়। ঢলে পড়া রোগটি মূলত মাটি বাহিত যা ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক এমনকি নেমাটোড বা কৃমি আক্রান্ত হতে পারে। স্যাঁতসেঁতে মাটি ও আর্দ্র আবহাওয়া ঢলেপড়া রোগের জন্য সহায়ক। ঢলে পড়া রোগের ফলে আক্রান্ত গাছের পাতা প্রথমে আংশিক ও পরে সম্পূর্ণ নেতিয়ে পড়ে এবং তিন চার দিনের মধ্যেই গাছটি মারা যায়। মাঠে অল্প বয়সে এ রোগ দেখা দিলে ফল ধরার আগে অধিকাংশ গাছ মারা যেতে পারে। মাটিবাহিত ফলে ঢলেপড়া রোগ নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন।


কিছু কিছু বন বেগুনের প্রজাতিতে এ রোগের উচ্চতর প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। প্রতিরোধী গুণাগুণটি আবাদি বেগুনে এখনও সফলভাবে সংযোজন বা সংস্থাপন করা সম্ভব হয়নি। এসব বন বেগুন বাংলাদেশের সর্বত্রই জন্মায়। এ বন বেগুন গাছের সাথে জোড়কলমের মাধ্যমে বেগুন গাছকে মাটি বাহিত রোগ থেকে রক্ষা করা যায় এবং উচ্চফলন নিশ্চিত করা সম্ভব।


বেগুনে জোড়কলম/গ্রাফটিং করার উদ্দেশ্য
১.     বেগুনের ঢলেপড়া, শিকড় গিঁট ও অন্যান্য মাটিবাহিত     রোগ কমিয়ে আনা
২.     বন বেগুনের মূল সবল হওয়ায় বেশি পরিমাণে খাদ্য দ্রব্য গ্রহণ, ফলে ফলন বেশি হয়।
৩. ফসলের জীবন কাল বৃদ্ধি হয়।

 

বীজতলা তৈরি ও বীজ বপন
●     ২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ১ মিটার প্রস্থ আকারের বীজতলা তৈরি করতে হবে।
●     বীজতলায় পরিমিত সার মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে।
●    লাইনে বীজ বপন করে, গুঁড়া মাটি দিয়ে উপরিভাগ পাতলা করে ঢেকে দিতে হবে।
●     রাত্রে পলিথিন সিট দ্বারা বীজতলা ঢেকে রাখতে হবে।
●     বীজতলায় ঝরনা দিয়ে মাঝে মাঝে হালকাভাবে পানি দিতে হবে।
●     বন বেগুনের বীজ বপন করার ১৫-২০ দিন পর ভালোজাতের বেগুন বীজ বপন করতে হবে।
●     বন বেগুনের চারা ১.৫ ইঞ্চি লম্বা হলে তখন প্রতিটি চারা পলিব্যাগে স্থানান্তর করতে হবে। এদেরকেই গ্রাফটিংয়ের রুট স্টক বা আদি জোড় হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। পূর্বেই অর্ধেক পচা গোবর ও অর্ধেক মাটি, বা বালি ভালোভাবে মিশিয়ে নিয়ে পলিব্যাগ ভর্তি করতে হবে।

 

রুট স্টক বা আদি জোড় নির্বাচন
●     পলিথিন ব্যাগে থাকা বন বেগুনের চারা ৪৫-৫০ দিন বা ৪-৫ পাতা বিশিষ্ট হলে এবং কান্ডের ব্যাস ২-৩ মি. মি. হলে জোড়কলম করার উপযুক্ত হয়।
সায়ন বা উপজোড় নির্বাচন
●     বেগুনের চারা ৩০-৩৫ দিন বা ২-৩ পাতা বিশিষ্ট হলে জোড়কলম করার উপযুক্ত হয়।
রুট স্টক বা আদি জোড় তৈরি
●     বন বেগুনের চারাসহ পলিথিন ব্যাগটি নিয়ে ধারাল ব্লেডের সাহায্যে চারার গোড়া থেকে ৫-৬ সেমি. ওপরে বা ওপর থেকে ২-৩ পাতার নিচে আড়াআড়িভাবে কেটে ফেলতে হবে।
●     আদি জোড় থেকে সব পাতা ছেঁটে দিতে হবে।
●     কাণ্ডের কাটা মাথাকে প্রায় ১ সেমি গভীর করে ২ ভাগে লম্বালম্বিভাবে চিড়তে হবে।

 

সায়ন বা উপজোড় তৈরি
●     বেগুনের চারা বীজতলা থেকে উঠিয়ে গোড়ার মাটি ধুয়ে পরিষ্কার করে অল্প পানিসহ পাত্রে গোড়ার অংশ ডুবিয়ে রাখতে হবে।
●     বেগুনের চারার মাথার ওপরের অংশের প্রায় ৫-৬ সেমি. নিচে কাটতে হবে।
●     উপজোড়ের বড় পাতাগুলো ছেঁটে দিতে হবে।
●     কাটা অংশের নিচের দুই পাশ থেকে প্রায় ১ সেমি আড়াআড়িভাবে ইংরেজি ‘ভি’ অক্ষরের আকৃতির মতো করে কাটতে হবে।

 

বেগুনের জোড়কলম লাগানোর পদ্ধতি
১.     বেগুনের চারার ‘ভি’ অক্ষরের আকৃতির মাথাটি বন বেগুন চারার কাটা স্থানে ঢুকিয়ে দিতে হবে।
২.     পরে পলিথিন স্ট্রিপ বা প্লাস্টিক ক্লিপ বা প্লাস্টিক টিউব দিয়ে জোড়াটি ভালোভাবে আটকে দিতে হবে।
৩.     পরবর্তীতে গাছের ওপরের অংশে পানি ছিটাতে হবে।
৪.     জোড়ার স্থানে যেন পানি না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
৫.     কলম করার কাজ বিকেলে করাই উত্তম।

 

কলমের পরিচর্যা
●     গাছ, বাশের শলা দ্বারা খাঁচা তৈরি করে পলিথিন ও চট বা কালোকাপড় দিয়ে খাঁচা ঢেকে দিতে হবে।
●     পলিথিন ও চটের ছাউনির মধ্যে নিচে খড় বিছিয়ে তার ওপর কলম রাখতে হবে এবং এ খড় দিনে কমপক্ষে তিনবার ভিজিয়ে দিতে হবে।
●     কলম করার পর আর্দ্রতা বাড়ানোর জন্য ৭ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন ৩-৪ বার কুয়াশার মতো করে পানি ছিটিয়ে আবার ঢেকে রাখতে হবে।
●     বৃষ্টি না হলে রাতে খাঁচায় আচ্ছাদন খুলে দিতে হবে।
●     দিনের বেলায় গাছ ঢেকে রাখতে হবে।
●     এক সপ্তাহ পর পলিথিন সরিয়ে শুধু চট বা কালোকাপড় দিয়ে আবার ১ সপ্তাহ ঢেকে রাখতে হবে।
●     কলম করার ১৫-২০ দিন বা ২-৩ সপ্তাহ পর গাছ মাঠে লাগানো উপযুক্ত হয়।
●     চারা লাগানোর আগে খাঁচা থেকে বের করে ৭ দিন ছায়ায় রেখে তারপর মূল জমিতে লাগাতে হবে।

 

জোড়কলম করা গাছ মাঠে লাগানো
●     জোড়কলম করা গাছ মাঠে লাগানোর ৩-৪ ঘণ্টা আগে ঝাজরি দিয়ে পানি দিয়ে মাটি ভিজিয়ে দিতে হবে। গাছ লাগানোর সময় পলিথিন ব্যাগটি ব্লেড দিয়ে দুই পাশ থেকে কেটে সরিয়ে ফেলতে হবে। বেগুন চাষের জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে জমি তৈরি করে নির্ধারিত দূরত্বে গোড়ার মাটিসহ চারা রোপণ করতে হবে।

 

সাবধানতা
●     রোপণকৃত চারায় প্রতি ১-২ সপ্তাহ পর পর বন বেগুনের গাছ থেকে গৃজানো ডালপালা কেটে দিতে হবে।
●     গাছ লাগানোর সময় ক্লিপ না খুলে ২-৩ সপ্তাহ পরে ক্লিপ খুলে নেয়া ভালো।
●     বেগুন গাছের কোনো ডালপালা মাটি স্পর্শ যাবে না তাই খুঁটির ব্যবস্থা করতে হবে।
●     কলম করা গাছে ফল ধরা ও ফসল তোলা সাধারণ গাছ হতে ১০-১৫ দিন দেরি হতে পারে।


উল্লেখ্য যে, ঢলেপড়া রোগ নিয়ন্ত্রণে গ্রাফটিং পদ্ধতি টমেটো ফসলের জন্যও একই পদ্ধতি অবলম্বন করে সহজেই চাষ করা যায়।

 

মোহাইমিনুর রশিদ*

*আঞ্চলিক বেতার কৃষি অফিসার, কৃষি তথ্য সার্ভিস, সিলেট। মোবাইল: ০১৭১৮৪২৯৪৫৯

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon